Disease BD

ডায়রিয়া হলে আপনি কি করবেন এবং ডায়রিয়া থেকে বাঁচার উপায়

ডায়রিয়া হলে আপনি কি করবেন এবং বাঁচার উপায়

পানির মত বার বার যদি কারো পাতলা পায়খানা হয় তাহলে তাকে ডায়রিয়া বলে । একজন মানুষের সাধারণত ২৪ ঘন্টার মধ্যে ৩ বার বা তার বেশি হতে পারে। এক্ষত্রে তিনবারের কম হলে ভয়ের তেমন কিছু নেই। কোনো প্রতিকার ছাড়াই অদৃশ্য হয়ে যাওয়া কে এর সাধারণ বৈশিষ্ট্য ধরা হয় । কিন্তু এটি কখনো একটি হালকা, অস্থায়ী পরিস্থিতি থেকে জীবননাশের পর্যায়ে চলে যেতে পারে।  বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তথ্য মতে, ৫ বছরের কম বয়সী শিশুদের মৃত্যুর অন্যতম প্রধান কারণ  ডায়রিয়া। ডায়রিয়ার কারণে শিশুদের অপুষ্টিতে ভোগতে দেখা যায় অনেক সময় । 

০১.ডায়রিয়া এর কারণ

ডায়রিয়া দেখা যাওয়ার মূল কারণ গুলোর এর মধ্যে রয়েছে-

  • দূষিত পানি পান করা 
  • শরীরে জীবাণুর  সংক্রামণ 
  • দূষিত খাবার বা পঁচা-বাশি খাবার গ্রহণ 
  • অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে বসবাস অথবা
  • ব্যক্তিগত পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা বজায় না রাখা 
  • অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ হতে খাবার বা পানীয় গ্রহণ 
০২.সংক্রামক ডায়রিয়া কেন হয়?
  • ভাইরাসজনিত। যেমন :এডেনোভাইরাস, রোটা ভাইরাস, এস্ট্রো ভাইরাসইত্যাদি।
  • ব্যাকটেরিয়াজনিত। যেমন : ই.কোলাই, সালমোনেল্লা, ভিব্রিও কলেরি ইত্যাদি।
  • পরজীবীজনিত।যেমন:জিয়ারডিয়া,সাইক্লোসপরা, ক্রিপটোসপরিডিয়াম ইত্যাদি।
০৩.অসংক্রামক ডায়রিয়া কেন হয়?
  • কিছু ওষুধ এর কারণে বা প্রভাবে হয়ে থাকে , যেমন – অ্যান্টাসিড (ম্যাগনেসিয়াম সমৃদ্ধ) এবং বিভিন্ন  ধরনের অ্যান্টিবায়োটিক মেডিসিন ইত্যাদি।
  • কিছু অসুখ, যেমন -, অন্ত্রে ক্যানসার, আলসারেটিভ কলাইটিস ,আইবিএস,  ডাইভার্টিকুলাইটিস ইত্যাদি।
০৪.ডায়রিয়ার লক্ষণ
  • তলপেটে তীব্র ব্যাথা বা কাঁমড় অনুভব করা
  • বমি বমি ভাব থাকা। কখনো বমি বমি ভাব নাও থাকতে পারে
  • হঠাৎ করেই মলত্যাগের জন্য প্রচণ্ড চাপ অনুভূত হওয়া
  • পায়খানার অনুভুতি হলে অতি দ্রুত টয়লেটে যাওয়া বা অপেক্ষা করতে না পারা
  • পায়খানা নিয়ন্ত্রণে রাখতে না পারা
  • শরীর অনেক বেশি দুর্বল হয়ে যাওয়া
  • সংক্রমণের কারণে যদি ডায়রিয়া হয় তাহলে আরও কিছু লক্ষণ থাকতে পারে :

১।জ্বর হওয়া এবং ঠাণ্ডা লাগা
২।পায়খানার সাথে রক্ত যাওয়া
৩।বমি হওয়া বা বমি বমি ভাব থাকা
৪।
হালকা মাথা ব্যাথা ও মাথা ঘোরা অনুভব করা

পানিশূন্যতা ডায়রিয়ার সবচেয়ে গুরুতর জটিলতা । ডায়রিয়ার কারণে আমাদের শরীর থেকে প্রয়োজনীয় তরলের একটি বিশাল অংশ বেরিয়ে যায় যার ফলে পানিশূন্যতার ঝুঁকি বেড়ে যায় । পানিশূন্যতার সাধারণ লক্ষণগুলো হলো প্রচণ্ড ক্লান্তি, মাথাব্যথা, হৃদ্‌স্পন্দন বৃদ্ধি, শুকনো শ্লেষ্মা, শুষ্ক মুখ, তৃষ্ণা বৃদ্ধি ও প্রস্রাব হ্রাস ।

শিশু-কিশোরদের মধ্যে ডায়রিয়ার লক্ষণ০৫.শিশু-কিশোরদের মধ্যে ডায়রিয়ার লক্ষণ
  • বারবার পানির পিপাসা পাওয়া
  • স্বাভাবিকের তুলনায় অনেক কম প্রস্রাব হওয়া, যেমন একটানা ৩ ঘন্টা বা তার থেকেও বেশি সময় ধরে প্রস্রাব না হওয়া
  • শারীরিক দুর্বলতা ও মুখ শুষ্ক দেখানো
  • ত্বকের কার্যক্ষমতা অনেকাংশে কমে যাওয়া
  • শিশুর কান্নার সময় চোখে পানি না থাকা
০৬.ডায়রিয়া প্রতিরোধ করার উপায়
  • রোগ ছড়ায় পানির মাধ্যমে। তাই পানি ফুটিয়ে খাওয়াটাই বুদ্ধিমানের কাজ
  • পানি ফুটিয়ে ঠান্ডা করে পান করতে হবে
  •  থালা বাসন পরিষ্কার পানিতে ভালভাবে ধুয়ে নিয়ে খাবার খেতে হবে
  • খাবার ঢেকে রাখতে হবে। পরিচ্ছন্ন পরিবেশে থাকলে মাছির বেশি উৎপাত থাকবে না
  • ডায়রিয়া হলে আতঙ্কিত হওয়া যাবেনা বরং ওআরএস স্যালাইন পানের সঙ্গে সঙ্গে রোগীর সামগ্রিক অবস্থার ওপর খেয়াল রাখতে হবে

আরো পড়ুন-
ডায়রিয়া হলে করণীয় কি-জানুন আর সচেতন হোন !

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top